আমার মতো ছাত্র রাষ্ট্রপতি হতে পারলে ভালো ছাত্র হবার দরকারটা কি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সন্তানদের লেখাপড়া নিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় না যেতে বাবা-মায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। সন্তানদের সঠিক দেয়ার পাশাপাশি অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০১৮এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

নিজের উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রপতি চলেন, ‘ফাস্ট সেকেন্ড হলে কি হয়? আমি তো একেবারেই খারাপ ছাত্র ছিলাম। আমার মতো খারাপ ছাত্র যদি রাষ্ট্রপতি হতে পারে তাহলে অত ভালো ছাত্র হবার দরকারটা কি?

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন বাতিল করে দেয়া উচিৎ বলেও উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘এখন এমন পদ্ধতি চালু করা দরকার যে, প্রশ্ন আগেই জানিয়ে দেয়া হবে যে, এই প্রশ্ন আসবে। এখন তুমি লেখো। তারা কি প্রশ্ন ফাঁস করবে? আপনারা মন্ত্রণালয় থেকেই বলে দেন প্রশ্ন। আপনারা সমস্ত সিলেবাস মিলিয়ে ২০ বা ২৫টা সেট প্রশ্ন তৈরি করে ওয়েবসাইটে দিয়ে দেন এবং বলে দেন যে, এর মধ্য থেকেই প্রশ্ন আসবে। এই পঁচিশটা থেকে কোনটা আসবে সেটা বলতে পারবেন না। কোন শিক্ষার্থী যদি এই ২৫টা প্রশ্নের উত্তর জানে তাহলে তোর তো পাশ করাই উচিৎ।

এভাবে প্রশ্ন করা হলে এবং পরীক্ষার পাঁচ মিনিট আগে যদি প্রশ্নের সেট বলে দেয়া তাহলে প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি। নকল এবং প্রশ্নফাঁস রোধে বাবা-মা এবং শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘কোন ছেলে বা মেয়ে যদি দুই নম্বরি চিন্তা করে তাহলে তার বাবা-মাকে তো বলতে হবে যে, তুমি বাবা ফেল করো কিন্তু এই আকামটা করো না। আমাদের বাবা-মা তো লেখাপড়া জানতো না কিন্তু তারা চিন্তাও করতে পারেনি যে, তাদের সন্তান নকল করবে। আমরা তো মনে করতাম, নকল করে ধরা খাইলে তো আত্মহত্যা করতে হবে। মান-ইজ্জত তো সবই যাবে। পাশে বসা ভালো ছেলের কাছে জিজ্ঞাসা করলে সে তো বাইরে গিয়ে বলবে যে, আমার কাছে জিজ্ঞাসা করেছে। মান-সম্মান কি আর থাকবে। আমরা এই ধরণের আত্মসম্মান বোধ নিয়ে চলা ফেরা করেছি।

উপস্থিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশংসা তাদের দায়িত্ব আরও ভালোভাবে পালন করার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।

তিনি বলেন, ‘বেতন কিংবা পদমর্যাদা নিয়ে মনে কষ্ট রাখবে না। আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যতদিন বেচে ছিলেন আমরা তাদের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করেছি। কলেজে গিয়ে কিন্তু আর সেটা করি নাই। এই যে মর্যাদা শুধু বেতন আর প্রোটোকলের জন্য আপনাদের মনে কষ্ট থাকা দরকার না। প্রতিটি ছেলে-মেয়ের মনে যেভাবে সারাজীবন থাকবেন এটাকে কিন্তু কোনভাবেই খাটো করে দেখার দরকার নেই। সচিব-মহাসচিব যাই হোক, আপনি যে সম্মান পাচ্ছেন সেটা তারা কোন কালেই পাবে না।

এছাড়া যেসকল শিক্ষকরা নিজেদের স্বার্থে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত হয়, দেশ ও জাতির স্বার্থে তাদের ফায়ারিং স্কোয়াডে নেয়া উচিত বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।

সূত্রঃ সময় নিউজ

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর